ঈদের মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সপ্রবাহ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৬৪ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা) এই অর্থের পরিমাণ ১৫ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৭৪৩ কোটি টাকা।
রেমিট্যান্সের (প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা) ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ মাসের পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মুসলমানদের অন্যতম বড় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিবার-পরিজনদের জন্য ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে পালন করতে ও কোরবানির পশু কেনার জন্য বেশি বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। এ কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এছাড়া গেল জুন মাসে ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এ অংক আগের মাসের চেয়ে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার কম। চলতি বছরের মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। আর আগের বছরের জুনের মাসের তুলনায় ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার কম। গত বছর মে মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিল ১৯৪ কোটি ৮ লাখ ডলার।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।
এদিকে দেশে ডলার সংকটে বাড়ছে দাম কমছে টাকার মান। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে এখন ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা রেটে ডলার বিক্রি করছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।
এর আগে, চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে দুই মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা।
তবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা, নগদ ডলার বিক্রি করছে ৯৯ থেকে ১০০ টাকা। আর ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয় ১০২ থেকে ১০৪ টাকা।