পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮-এর এর মন্ত্রী পর্যায়ের ২০তম আলোচনা সভায় খাদ্য ও জ্বালানি-নিরাপত্তা, বাণিজ্য, পর্যটন ও জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
রোববার রাজধানীতে গণমাধ্যমকে ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জ্বালানি ও খাদ্যনিরাপত্তা একটি বৈশ্বিক সমস্যা, যা বৈঠকে আলোচনা করা হবে। কারণ এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা খাদ্য নিরাপত্তাকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যু বহুল আলোচিত হবে। আমরা অন্য বন্ধুদের সাথে আমাদের দক্ষতা শেয়ার করতে চাই। সহযোগিতার অনেক সুযোগ রয়েছে।’
জ্বালানি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, এটি সব জায়গায় আলোচিত হচ্ছে এবং এটি বিশ্বব্যাপী একটি আলোচিত বিষয়। আমাদের অবশ্যই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিয়েও আলোচনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘যদিও কিছু ডি-৮ দেশ পর্যটন খাতে পরিপক্কতা দেখিয়েছে, তবে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের আরো বেশি কিছু করার সুযোগ রয়েছে।’
মোমেন বলেন, আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি পেলেও ডি-৮ দেশগুলো এ বিষয়ে আরো কিছু করতে পারেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘কিভাবে বাণিজ্যকে আরো প্রসারিত করা যায় আমরা সে বিষয়ে আলোচনা করব।’
তিনি বলেন, ‘ডি-৮ প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ)-এর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তঃবাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’
২০০৬ সালের ১৩ মে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে স্বাক্ষরিত ডি-৮ প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) বাণিজ্যে ডি-৮ সহযোগিতার সবচেয়ে বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
চুক্তিটি সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক গভীর করার পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ এবং উচ্চ স্তরে অর্থনৈতিক সংলাপের সূচনা করে।
কয়েক দফা বহুপাক্ষিক আলোচনার পর ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পিটিএ কার্যকর হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২৭ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮ বৈঠকে আজারবাইজানের সদস্যপদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বৈঠকে ডি-৮ দেশের কিছু পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তাদের সহকর্মীরা প্রতিনিধিত্ব করবেন।’
মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এতে যোগ দিয়ে সভার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ২৫ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ডি-৮ কমিশনের ৪৫তম অধিবেশনের আয়োজন করবে।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশনের (ডি-৮) বা ডেভেলপিং-৮ হলো উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য গঠিত একটি সংস্থা। এর সদস্য দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
১৯৯৭ সালের ১৫ জুন সরকার প্রধানদের ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ডি-৮ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করা হয়েছিল।
ডি-৮ এর উদ্দেশ্য হলো বিশ্ব অর্থনীতিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান উন্নত করা, বাণিজ্য সম্পর্কের বৈচিত্র্য আনা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা।