বর্তমানে জিডিপির অনুপাতে বিদেশি দেনা পরিশোধ করা হয় ১.১% এর মতো। ২০২৬ সাল নাগাদ তা দ্বিগুণ হতে পারে। এই হার ২% বেড়ে ওই সময় প্রকল্পগুলোর ব্যয় প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে
দেশের ২০টি মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ২০২৪ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আসছে। মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধের সময় এগিয়ে আসছে, যা অর্থনীতির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি পরিকল্পনা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুন) বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল আলাপচারিতায় এই মতামত ব্যক্ত করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বিদেশি দায়-দেনা পরিশোধ করা হয় ১.১% এর মতো। ২০২৬ সাল নাগাদ তা দ্বিগুণ হতে পারে। এই হার ২% এ পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। এই মেগা প্রকল্পগুলোর ব্যয় প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। এই ঋণগুলোর মধ্যে প্রায় ৬১% বা ৪৩ বিলিয়ন ডলার রাশিয়া, জাপান এবং চীনের কাছ থেকে নেওয়া।
ফলে সমস্যা সমাধানে ওই সময়ে দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি কেমন থাকবে, অর্থনীতি কতটা সুসংহত থাকবে, তার ওপর নির্ভর করে এখনই একটি পরিকল্পনা করা দরকার বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের ২০টি বড় প্রকল্পে প্রায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৬২% বিদেশি ঋণ। প্রায় এক যুগ সময়ের মধ্যে (২০০৯-২০২১) বেশিরভাগ প্রকল্প ২০১৪-২০১৮ সালের মধ্যে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মোট ঋণের ৩৬.৬% রাশিয়ার কাছে, ৩৫% জাপানের কাছে এবং ২১% চীনের কাছে নেওয়া। এরমধ্যে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে চীনের ঋণ পরিশোধের চাপ আসবে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বড় প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের জাতীয় ঐক্যমত আছে। বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখা যায় বলে রাজনীতিবিদরা এতে আগ্রহ দেখান।
তবে, প্রকল্প বাস্তবায়নে এক ধরনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবের কারণে রিজার্ভ ভারসাম্যকে প্রভাবাবিত করেছে। প্রকল্পগুলোতে “দুর্নীতি, ব্যয় এবং সময়” বাড়ার কারণে অর্থনৈতিক ভিত্তি ক্রমাগত দুর্বল হয়েছে।