দেশে যখন কোরবানির পশুর ক্রেতারা বেশি দামের অভিযোগ তুলছেন ঠিক একই সময়ে প্রতিবেশী দেশে কোরবানির পশুর দামের প্রসঙ্গটিও আলোচনা হচ্ছে নানা মাধ্যমে। দেশে ব্যবসায়ীরা পরিবহন খরচ, পশু লালন-পালনের ব্যয় বৃদ্ধি এবং গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধির” কথা বলে কোরবানির পশুর দাম বেশি চাচ্ছেন। ফলে হাটে ক্রেতার সংখ্যা তেমন নেই। বেচাবিক্রিও অন্যবারের তুলনায় কম।
শুক্রবার (৮ জুলাই) ঢাকার বিভিন্ন হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কোরবানির পশুর বিশেষ করে গরুর সর্বনিম্ন দাম চাওয়া হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তার থেকে সামান্য বড় গরুর দাম লাখের অধিক। একই সময়ে ভারতেও ঈদ-উল-আজহা পালিত হবে। সেখানকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা কোরবানির পশু কিনেছেন। তারা পশু ক্রয়ের নানা বিষয়ে অনুভূতিও জানিয়েছেন অনলাইন মাধ্যমে।
এক ভিডিওতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিরাজউদ্দিন নামে এক ক্রেতা দাবি করেছেন, তিনি ৬০ হাজার টাকায় দুটি গরু কিনেছেন। গোলাম কিবরিয়া নামে একজন গরু বিক্রেতা জানান, তিনি তার পোষা একটি গরু ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাচ্ছেন। সোলেমান নামে আরেক বিক্রেতা তার একটি বড় গরু ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি করার কথা জানান।
সে তুলনায় ঢাকায় কেনা একটি গরুর মূল্যে ভারতে দুটি গরু কেনা যাবে। কোরবানির আর দুদিন বাকি থাকলেও বাজারে ক্রেতা নেই। বিক্রেতারা আশা করছিলেন, শুক্রবার থেকে বেচাবিক্রি বাড়বে। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
ঢাকার গবাদিপশু বিক্রেতারা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ও পরিবহন খরচ বাড়ায় কোরবানির পশুর দাম বাড়াতে হচ্ছে।
তাছাড়া গরুর মাংসের দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বাড়াতে হচ্ছে বলে জানান তারা। লোকেরা আজকাল অনলাইনে কোরবানির পশুও কিনতে পারে, যা গবাদি পশুর দামকেও প্রভাবিত করেছে, তারা যোগ করেছে।
ঈদের আর মাত্র দুই দিন বাকি থাকায় ইজারাদার ও বিক্রেতারা আশা করেছিলেন শুক্রবার থেকে ঢাকায় কোরবানির পশু বিক্রি বাড়বে, কিন্তু দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি।
ঢাকা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে রাজধানীর আফতাবনগর গরুর হাটের ইজারাদার মিজানুর রহমান জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর কোরবানির পশুর দাম বেশি।
এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির কারণে পশু পরিবহনে এখন দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে। পশু পরিবহনে প্রতি ট্রাকে দিতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। অন্যদিকে বাজারে মাংসের দামও বেড়েছে। ৫০০ টাকা কেজি থেকে ৭০০ টাকা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে পশু ক্রয়ের বিষয়টিও প্রভাব ফেলছে।
বাজারের উন্নতি না হলে শেষ সময়ে তারা কম দামে বিক্রি করবেন। কারণ, বিক্রি না হলে সেগুলো ফিরিয়ে নিতে আবার পরিবহন খরচের বিষয়টি ভাবতে হচ্ছে।
ফিরোজ আলম নামে এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, “ক্রেতারা যে দাম বলছেন তা দিয়ে গরুর খাবারের খরচও উঠবে না। অন্যদিকে ক্রেতাদের পাল্টা অভিযোগ, তারা সামর্থ্যের মধ্যে পছন্দের পশুটি কিনতে পারছেন না।”