ঢাকারবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শুধু বাজেটে নয়, শিক্ষা উপেক্ষিত সবখানে

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
জুন ১৯, ২০২২ ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ডয়চে ভেলে

প্রকাশিত: ১০:৪৫ দুপুর জুন ১৯, ২০২২

 

বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে বাংলাদেশে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর এই দুই বছরে স্কুল ছেড়েছে অন্তত ৩৫% শিক্ষার্থী। আর অর্থনৈতিক সংকটে ১৬% শিক্ষার্থী পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছে না।

 

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং জিআইজেড-এর রুল অব ল প্রোগ্রামের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ চিত্র। যার শিরোনাম ছিল “অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস ভালনারাবিলিটিজ অ্যান্ড ট্রানজিশন ইন দ্য কনটেক্সট অফ কোভিড-১৯”।

 

বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের তিনটি জেলা গাইবান্ধা (চরম দরিদ্রতার ভিত্তিতে), কুমিল্লা (বেশি প্রবাসীর ভিত্তিতে) ও নড়াইলের (বেশি বাল্য বিবাহের ভিত্তিতে) ২৬টি উপজেলার ২ হাজার ৭৫৮টি পরিবারের ৩ হাজার ১৩৯ জন কিশোর-কিশোরীর সাক্ষাৎকারভিত্তিক জরিপটি করা হয়।

 

এই ঝরে পড়াকে শিক্ষাখাতের “গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শিক্ষাবিদরা। কিন্তু সংকট উত্তরণে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় হতাশা ছিল তাদের কণ্ঠে।

 

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে দেশে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নানাবিধ প্রয়াস সত্ত্বেও শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ ঘাটতি হয়েছে। এ ছাড়া আগেও শিক্ষার মানের যে সমস্যা ছিল, তা কোভিডের কারণে আরও অনেক বেশি ঘনীভূত হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে দেওয়া হয়নি। বলা যায়, এবারের শিক্ষাবাজেট গতানুগতিক।”

 

করোনাভাইরাসের কারণে যেসব শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, তাদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

 

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, যা বর্তমান সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। যারা ঝরে গেছে সেইসব শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। এবং যারা স্কুলে থেকে গেছে, তাদেরও পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাই তাদের প্রতিও বিশেষ নজর দিতে হবে। আর প্রয়োজন হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকার থেকে থোক বরাদ্দ নিতে পারে।”

 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের সব অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে, যদি না আমরা কোভিডের কারণে যেসব শিক্ষার্থী ঝরে পড়লো, তাদের ফিরিয়ে আনতে না পারি। এ ক্ষতির ব্যাপ্তি হয়ত এই মুহূর্তে বোঝা যাবে না, তবে ৫/১০ বছর পর তা টের পাওয়া যাবে।”

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীদের লার্নিং লস ও গ্যাপ- এই দুই ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না পারলে তারা ভবিষ্যতে আমাদের বোঝা হয়ে সমাজ ও অর্থনীতির ওপর প্রেশার ক্রিয়েট করবে।”

 

প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাত

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে যে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৯ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৪.৭%। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বাজেটের ১৫.৭%। সেই হিসাবে নতুন অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ ১% কমেছে।

 

বাজেটে এককভাবে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেয়া হবে ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১২.১%।

 

শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মতে, “শিক্ষাবাজেট আর দশটা খাতের মতো নয়, এটা ভিশনারি হওয়া উচিত।”

 

এই শিক্ষাবিদ বলেন, “আমাদের বাজেট তো হয় ব্যবসায়ীদের জন্য। তাই আমরা শিক্ষায় এর চেয়ে বেশি বরাদ্দ আশা করতে পারি না। আমাদের বাজেটে যে নৈতিকতা থাকে না, তার প্রমাণ হলো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। বাজেটে যদি এ ধরনের অনৈতিকতা থাকে, তাহলে এর প্রভাব তো শিক্ষাবাজেটে পড়বেই।”

 

অর্থনীতিবিদ ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “সরকার এবার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কিছুটা বাড়িয়েছে। আরও বাড়ালে ভালো হতো। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, বাজেট তো সঠিকভাবে ব্যয় হয় না। সরকার বাজেটে যে টাকা বরাদ্দ করে সেটাকে সঠিকভাবে, সময়মতও এবং পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন।”

 

ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্র রাজনীতি

শিক্ষা শুধু বাজেটে নয়, উপেক্ষিত হচ্ছে আরও অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু সংকট নিরসনে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই। করোনাভাইরাসের সময় ক্যাম্পাসগুলোতে যে স্থবিরতা তৈরি করেছিল, ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও সেটি পুরোপুরি এখনো কাটেনি। ঝিমিয়ে পড়া ছাত্র রাজনীতি এখনো আড়মোড়া ভাঙেনি।

 

স্থানীয় থেকে জাতীয় নির্বাচন—প্রতিটি নির্বাচন নিয়ম মেনে মোটামুটি সময়মতও অনুষ্ঠিত হলেও ছাত্রসংসদ নির্বাচনের অচলাবস্থা কাটেনি। বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরবগাঁথা শিক্ষার্থীদের হাতে থাকলেও, তা নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই বর্তমান শিক্ষার্থীদের।

 

যদিও অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। কিন্তু অধিকার আদায়ের শিক্ষার্থীদের যে লড়াকু মনোভাব, সেটা আর চোখে পড়ে না।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা ও খাদ্য সংকটের আশঙ্কা, করোনাভাইরাসের মহামারির অভিঘাতে এই সময়ে শিক্ষাখাতে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছ থেকে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কয়েকটি ছাত্র সংগঠন বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানালেও তেমন কোনো কর্মসূচি দিতে দেখা যায়নি।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, “এখন ছাত্র রাজনীতি করে অছাত্ররা। তারা যে ছাত্রদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করে এমনটা তাদের কর্মকাণ্ডে দেখা যায় না। তারা কাজ করে রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে। তাই শিক্ষা বাজেট নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।”

 

ছাত্র রাজনীতি কলুষিত হওয়ার কারণে “শিক্ষা” সব ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মনে করছেন ডাকসুর সর্বশেষ সাবেক এই ভিপি।

 

নুরুল হক নূর বলেন, “দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। আমাদের ডাকসু থেকে সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সুস্থ ধারার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ডাকসু না থাকায় সেটিও বন্ধ। এরপর আমরা কী দেখলাম? অস্ত্র নিয়ে দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এগুলোই ছাত্র রাজনীতির অবক্ষয়ের বড় কারণ।”

 

তার মতে, “ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া সামগ্রিক রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় অ্যান্টিবায়োটিক। আমি মনে করি, এর মধ্য দিয়ে মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদরা বের হয়ে আসবেন। এর মধ্য দিয়েই রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসবে।”

 

শিক্ষা নিয়ে সব সময় সোচ্চার আছেন বলে দাবি করেন বামপন্থি ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ।

 

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত। এ সংকট থেকে উত্তরণে আমরা সরকারের কাছে একটি রোডম্যাপ তৈরির দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এবারের বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন আমরা দেখিনি। আমরা দাবি আদায়ে আগেও সোচ্চার ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।”

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকেও ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন এই ছাত্র নেতা। তিনি বলেন, “তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে, এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। কিন্তু তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের হাতে জিম্মি। এজন্য তারা এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।”

 

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, “এ সরকার নানা ফন্দি-ফিকির করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রেখেছে। আমরা শিগগিরই এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।”

 

ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসাইন। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, এটি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলি, শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা বলি। এগুলোর জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। ছাত্র সংসদ নির্বাচন না থাকলে ছাত্র রাজনীতি কোনো জবাবদিহির জায়গায় থাকে না।”

 

তৈরি হচ্ছে না শিক্ষক, প্রাথমিকে অমনোযোগিতা, নেই গবেষণা

মানসম্মত শিক্ষক তৈরি করতে না পারা ও যাদের মধ্যে ভালো শিক্ষক হওয়ার গুণাবলী আছে তাদের ধরে রাখতে না পারাও শিক্ষাখাতের একটি ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন শিক্ষাবিদরা।

 

কারণ ব্যাখ্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, “এর কারণ যারা ভালো শিক্ষক হতে পারতো, তারা এ পেশায় আসছে না। আসলেও তারা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এজন্য আমি বহুদিন থেকে বলে আসছি, এ পেশায় যারা আসবেন, তাদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।”

 

শিক্ষকদের মানুষ গড়ার কারিগর বলা হলে তাদের বেশি সুযোগ-সুবিধা কেন দেওয়া হবে না- এমন প্রশ্নও তোলেন অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো আছে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শিক্ষকতা পেশায় যোগ্য ব্যক্তিরা না এলে ভালো মানের শিক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।”

 

প্রাথমিক শিক্ষায় খুব বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে বলেও মনে করেন না এই শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, “প্রাইমারি শিক্ষাকে ভালো করতে না পারলে ওপরের স্তরে মানসম্মত শিক্ষা আপনি আশা করতে পারবেন না। কারণ, প্রাইমারি শিক্ষাই হলো বুনিয়াদ। যতই আপনি কারিকুলাম পরিবর্তন করুন না কেন, আগে প্রাইমারি শিক্ষাকে সঠিক ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হবে।”

 

শিক্ষাব্যবস্থা জ্ঞানকেন্দ্রিক না হয়ে চাকরি ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে বলেও আক্ষেপ করেন তিনি।

 

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান বলেন, “শিক্ষা নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণায় বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। কারণ, এখনো মানুষ মনে করে ভালো নম্বর অর্জন, এটাই শিখনের মাপকাঠি।”

 

শিক্ষাব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করতে না পারাও অন্যতম সমস্যা বলে মনে করেন এই শিক্ষক। তিনি বলেন, “সবাইকে যুক্ত করতে না পারলে শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ পরির্বতনের লক্ষ্য কখনো অর্জন সম্ভব নয়।”

 

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা না থাকাটাও “অবহেলিত শিক্ষাখাতের” আরেকটি নিদর্শন হিসেবে দেখছেন অনেকে। ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, “বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই হলো টিচিং ইউনিভার্সিটি। এগুলো একদমই গবেষণাকেন্দ্রিক না। একজন শিক্ষক যদি সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস নেয়, তাহলে সে গবেষণা করবে কিভাবে?”

 

“অনেকে গবেষণায় ফান্ড সংকটের কথা বলে। আমি কিন্তু এ বিষয়ে একমত নই। কারণ, ইউজিসি চেয়ারম্যান হিসেবে দেখেছি গবেষণা ফান্ডের প্রচুর টাকা অবণ্টিত থাকে।”