বৃষ্টির পানি আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারী ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
এদিকে গত পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার ৯ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। বিশেষ করে দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যাকবলিতরা নৌকা ও ঘরের উঁচু করা মাচানে বসবাস করলেও শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন। অনেকে পরিবার, ঘর-বাড়ি ছেড়ে পাকা সড়ক ও উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। শিশু ও গবাদি পশুরও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদরের শুলকুর বাজার এলাকায় পাকা সড়কের পাশে আশ্রয় নেওয়া আমেনা বেগম বলেন, ঘরের ভেতর পানি ঢুকে চৌকি তলিয়ে গেছে। থাকার মতো অবস্থা না থাকায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে রাস্তায় এসে উঠেছি।
সদরের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর এলাকার কাদের আলী বলেন, ঘরের সব কিছু পানিতে তলিয়ে গেছে। নিকটবর্তী কোনো উঁচু জায়গা না থাকায় নৌকায় দিন পার করছি। ঠিকমতো রান্না করতে না পারায় খেয়ে না খেয়ে আছি। এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাইনি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বন্যার্তদের ২৯৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১১ লাখ টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৭ লাখ টাকার শিশুখাদ্য ও ১৯ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো বিতরণ করা শুরু হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, ধরলার পানি স্থিতিশীল থাকলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।