বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের পৃথক দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নুর নূরউদ্দিনের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েছিল হাইকোর্ট।
বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মেয়াদ বাড়ান।
ওই বছরের ১৮ জুন একই বেঞ্চ দুই মামলায় বিএনপি প্রধানকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১৪ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে ২০১৭ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে দুটি মামলা হয়।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা চান নাই। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব। জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি ও লুটপাট। দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে, সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট ও হত্যা করছে। পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিরোধীদলসহ ভালো ভালো লোককে গ্রেপ্তার, গুম এবং হত্যা করছে। উন্নয়নের নামে পদ্মাসেতু ও ফ্লাইওভারের কাজ বিলম্ব করে ব্যয়বহুল অর্থ দেখিয়ে লুটপাট করছে। যার বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হুকুম দিচ্ছি, তোমরা প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে নেমে এ সরকারের বিরুদ্ধে সব জনগণ ও যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার ব্যবস্থা কর।”
এ ঘটনায় ২০১৭ সালে ২৫ জানুয়ারি তারিখে এবি সিদ্দিকী বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ২০১৪ সালে পুরান ঢাকায় দর্জিকর্মী বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে খালেদার জিয়ার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছিলেন এ বি সিদ্দিকী। এই দুই মামলায় হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিনসহ রুল দিয়েছিলেন। আজ দুই মামলায় স্থায়ী জামিন দিলেন আদালত।