পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানিকে প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারী মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরীকে এফডিআরের ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৮ টাকা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে এ অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
রোববার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইমদাদুল ইসলামকে উদ্দেশ করে বলেন, ৩১ আগস্টের মধ্যে আমানতকারীর এফডিআরের টাকা পরিশোধ করবেন। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি, এ সময়ের টাকা পরিশোধ না করলে আমরা আপনাদের কোম্পানি শাটডাউন করে দেব। প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগ করব।
এসময় আদালতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি ডেপুটি গর্ভনর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাসেরকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আপনাদের দায়িত্ব সুপারভাইজ করা। তারা গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করবে, আর গ্রাহক টাকা আমানত রেখে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবেন, এটা হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে পারে না। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অ্যাকশন না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মর্যাদা থাকবে না।
আদালত আরও বলেন, আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তদারকি প্রতিষ্ঠান) ঘুমিয়ে থাকি বলেই পিকে হালদারের সৃষ্টি হয়। আমরা ঘুমিয়ে না থাকলে পিকে হালদারের সৃষ্টি হতো না।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আইনজীবীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডেলসি কটন স্পিনিং মিলস ও নাহিদ কটনস মিলসের নির্বাহী পরিচালক মো.ইশতিয়াক হাসান চৌধুরী পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানিতে এফডিআর করেছিলেন। এফডিআরের মেয়াদ কয়েক বছর আগে পূর্ণ হয়ে যায়।
জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানির কাছে মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরীর পাওনা দাঁড়ায় ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৮ টাকা। এ টাকার জন্য বার বার জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানির কাছে ধরনা দিয়েও টাকা আদায় করতে পারেননি। পাওনা আদায়ে গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেন মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরী।
গত বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা পরিশোধ করতে চিঠি দেয় জিএসপি কর্তৃপক্ষকে। এরপরও টাকা পরিশোধ করেনি। উপায়ান্তর না পেয়ে পাওনা টাকা আদায়ে হাইকোর্টে রিট করেন মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরী। রিট শুনানির এক পর্যায়ে গত ৫ জুন হাইকোর্ট জিএসপি ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তলব করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরকে আসতে বলা হয়। আদালতের আদেশে জিএসপি ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আজ হাজির হয়েছিলেন।