ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি কঠিন বলে মন্তব্য করে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অঙ্গীকার করেছেন, তার দেশে রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হবে। পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের রাস্তায় উভয়পক্ষের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে মঙ্গলবার (৭ জুন) এই অঙ্গীকার করেন তিনি।
বুধবার (৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। রুশ সামরিক বাহিনী সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দেশটির বিস্তৃত ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক চলা রাশিয়ার সর্বাত্মক এই হামলা সম্প্রতি গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে।
রাশিয়া অবশ্য তিনমাস ধরে সামরিক অভিযান চালালেও রুশ সেনারা প্রাথমিকভাবে প্রায় পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে হামলা পরিচালনা করে। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মূল মনোযোগ দেয় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়। মূলত তখন থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রুশ সেনারা।
আরও স্পষ্ট করে বললে, রুশ-ভাষী মানুষকে রক্ষা এবং রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার কথা বলে দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত ডনবাস ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আর এতেই রুশ সেনাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হচ্ছে ইউক্রেনের এই শিল্প এলাকা।
এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিওলিংকের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের সমগ্র ভূখণ্ডকে সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করতে হবে।’
মস্কোকে ‘অপমানিত’ না করার বিষয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর করা মন্তব্যের ব্যাপরে জানতে চাইলে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা কাউকে অপমান করতে যাচ্ছি না, আমরা যথাযথ জবাব দিতে যাচ্ছি।’
মঙ্গলবার গভীর রাতে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, রুশ আক্রমণের কারণে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের সিভিয়েরোদোনেতস্ক, লিসিচানস্ক এবং পোপাসনা এলাকা এখনও সবচেয়ে কঠিন জায়গা হিসেবে রয়ে গেছে।
অবশ্য ডনবাসে রুশ হামলার বিরুদ্ধে ‘বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ’ চলমান রয়েছে বলে জেলেনস্কি দাবি করলেও মস্কো বলছে, যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনারা অগ্রসর হচ্ছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে তাদের দাবি যাচাই করতে পারেনি।
অন্যদিকে ডনবাসের লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি গাইদাই বলেছেন, সিভিয়ারোদোনেতস্ক শহরের কেন্দ্রে রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করা ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জন্য খুবই কঠিন।