আর্জেন্টিনা দলটার নেতা যে লিওনেল মেসি তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। সতীর্থদের কাছে তিনি এই দলটার রাজা, যার জন্য কঠিন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে তারা দ্বিধা করেন না। এমনটাই বলেছিলেন আলবিসেলেস্তে মিডফিল্ডার দি পল। মেসির কথায় নাকি যুদ্ধেও নেমে যেতে পারেন তিনি। মেসির আরেক সতীর্থের মতে, আর্জেন্টিনা দলটা মেসির জন্য যুদ্ধ করা সিংহের দল। অ্যাস্টন ভিলার গোলরক্ষক এবার বলছেন, মেসির কথা এতটা অনুপ্রেরণাদায়ী যে, মেসি কথা বললে স্বয়ং প্রেসিডেন্টও চুপ থাকতে বাধ্য হবেন।
২০২১ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। এর আগে টানা দুই কোপার ফাইনালে হারা আর্জেন্টিনা অধিনায়ক এবার ফাইনালের আগে ড্রেসিংরুমে রাখেন দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ী ভাষণ। মেসির সেই ভাষণ নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয় আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুমে। কেমন ছিল মেসির সেই ভাষণের সময় আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুমের অবস্থা? সম্প্রতি সেটি জানা গেছে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজের এক সাক্ষাৎকার থেকে।
মার্টিনেজ জানিয়েছেন, মেসি যখন সেদিন কথা বলছিলেন, গোটা ড্রেসিংরুম নির্বাক হয়ে গিয়েছিল। পিনপতন নীরবতায় মেসির কথা প্রত্যেকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিল। এমনকি চুপচাপ শুনছিলেন কোচ স্কলানি। এমির বিশ্বাস সেদিন যদি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট সেখানে উপস্থিত থাকতেন, তবে তিনিও চুপচাপ শুনতে বাধ্য হতেন।
সম্প্রতি প্রাইম ভিডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক বলেন, ‘তিনি সেদিন একটা ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানে বলেছিলেন এটাই তার শেষ; তিনি এখানে নিজের সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দেবেন।’
সেদিন মেসির সেই কথা এমির হৃদয়ে এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, তিনি রীতিমতো কাঁপতে শুরু করে দিয়েছিলেন। তার ভাষায়, ‘মেসি যখন সেই ভাষণ দিচ্ছিল, তখন আমার গায়ে রীতিমতো কাঁপুনি শুরু হয়ে গিয়েছিল।’
সেটা তো কোপার মতো টুর্নামেন্টের ফাইনালের আগের চিত্র। সাধারণ ম্যাচের সময় কেমন হয় ড্রেসিংরুমের পরিবেশ। আকাশি-সাদার গোলরক্ষক জানান, ‘সবাই চুপ হয়ে যায় যখন মেসি কথা বলে। সবাই এমনটাই করে, সে যে-ই হোক না কেন: তিনি কোচ হোন বা আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি, সেখানে যে-ই থাকুন-না কেন, তারা চুপ হয়ে যান।’
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এখন পর্যন্ত ১৬২টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। ৮৬ গোল নিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। সাতবার ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা জাতীয় দলের হয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে জিতেছেন বেশকিছু ব্যক্তিগত স্বীকৃতি। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হারলেও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল জিতেছিলেন মেসি। ২০১৫ কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও তিনিই জেতেন।
তবে মেসির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত আসলে ২০২১ সালের কোপা আমেরিকায়। ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার পক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতেন মেসি। সেই টুর্নামেন্টে গোল্ডেন বলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুটও জেতেন তিনি।